নজরে শেখ হাসিনার কূটনৈতিক বার্তা
সভাপতি তিনিই থাকছেন এটা পরিষ্কার। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগ সুপ্রিমো শেখ হাসিনার বার্তার দিকেই লক্ষ্য রাখছে দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক মহল। আজ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশে পরপর তিনবার টানা ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের ২১ তম জাতীয় সম্মেলন। দুই দিনব্যাপী আয়োজিত এই সম্মেলনে শেষ হবে শনিবার। কূটনৈতিক মহলের ধারণা, সাম্প্রতিক পরিস্থিতির অন্যতম জ্বলন্ত বিষয়টি হল প্রতিবেশী ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জিকরণ। সংশোধিত নাগরিক আইনে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু অ-মুসলিমরা ভারতের নাগরিক হতে পারবেন। এদিকে আইনটি ঘিরে উত্তাল ভারত। বাংলাদেশ লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গ, আসামের পরিস্থিতি আগেই অগ্নিগর্ভ ও রক্তাক্ত। উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলির প্রতিবাদ চরমে। তার পাশাপাশি বিক্ষোভ ছড়িয়েছে দিল্লি, মুম্বই, লখনউ, পাটনায়। একের পর এক রাজ্যের বিক্ষোভ চরমে। তবে বাংলাদেশ সরকারের দাবি, সংখ্যালঘুরা নিরাপদেই রয়েছেন। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে কোনও অবস্থায় পাকিস্তানের সঙ্গে এক আসনে বাংলাদেশকে ফেলা ঠিক নয়। আইনটি জারি হওয়ার পর প্রথমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ও পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ্দুজামান খান কামাল ভারত সফর বাতিল করেন। এটা কূটনৈতিক বার্তা বলেই মনে করছে ঢাকা ও নয়াদিল্লির সংশ্লিষ্ট মহল। ২১ তম জাতীয় সম্মেলন থেকে দলনেত্রী তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবেশী দেশের প্রতি কী বার্তা দিতে চলেছেন তাও লক্ষণীয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের কন্যা হাসিনা। তাঁর বার্তায় দলীয় শৃঙ্খলা, দলের আগামী নীতি ও কূটনৈতিক ইঙ্গিত নিয়ে চলছে চর্চা। আওয়ামী লীগ সূত্রে খবর, শুক্রবার দুপুরে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠান উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে দেওয়া হয়েছে পুরো সম্মেলনস্থল। ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে খবর, চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে তৎপর কমান্ডো বাহিনি। প্রত্যেক প্রতিনিধিকেই বিশেষ পরীক্ষা করে তবে সম্মেলনে ঢুকতে দেওয়া হবে। সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের আওয়ামী লীগের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরে আয়োজন করা হয়েছে চিত্রপ্রদর্শনী। এতে থাকছে, ১৯৪৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নানা মুহূর্ত। এছাড়াও বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের উপর চিত্র ও তথ্য প্রদর্শনী। দলের প্রতীক নৌকার আদলে তৈরি হয়েছে মঞ্চ। ডিজিটাল বাংলাদেশকে তুলে ধরতে সম্মেলনের মঞ্চটি হবে ডিজিটাল। এর উচ্চতা ২৮ ফুট। দৈর্ঘ্য দেড়শ ফুট। প্রস্থ ১৪০ ফুট। ২৮টি এলইডি পর্দায় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান তুলে ধরা হবে। জাতীয় পতাকা ও জাতীয় স্মৃতিসৌধ শোভিত সম্মেলন মঞ্চে থাকবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি।